কিভাবে জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করবেন
প্রতিটি শিশু জন্মের পর সবার প্রথম যে কাজটি করতে হবে সেটি হল সে শিশুর জন্ম নিবন্ধন এর জন্য আবেদন করতে হবে।যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে একটি শিশু ১৮ বছর পর্যন্ত নাবালক থাকে।তাই সে তার জাতীয় সনদপত্রের জন্য আবেদন করতে পারে না।আর জাতীয় সনদপত্র না থাকলে সরকারিভাবে কোন কিছুর জন্য আবেদন করা যায় না। যেমন পাসপোর্ট,ইত্যাদি তাই জন্ম নিবন্ধন করানো জরুরী ।কারণ জন্ম নিবন্ধনের মাধ্যমে একটি শিশু জাতীয় সনদপত্র না পাওয়ার আগ পর্যন্ত সব রকমের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারে যেটি একটি নাগরিক তার রাষ্ট্র থেকে ভোগ করে। আমি আজকে আমার এই লেখাটির মাধ্যমে কিভাবে জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে হয় এবং প্রয়োজনীয় কি কি ডকুমেন্টস লাগে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
টিকা কার্ড সংগ্রহ করুন
জন্ম নিবন্ধন আবেদনের ক্ষেত্রে সবার আগে যে জিনিসটি সংগ্রহ করে রাখতে হবে সেটি হল টিকা কার্ড।বাচ্চা জন্ম হওয়ার পর থেকে বাচ্চাকে কিছু সপ্তাহ পরপর টিকা প্রদান করতে হয়।এই টিকা প্রদান করার সময় একটি টিকা কার্ড দেয়া হয়। এই টিকা কার্ড এর মাধ্যমে বোঝা যায় যে বাচ্চাটি এই দেশে জন্মগ্রহণ করেছে এবং সে বাংলাদেশের নাগরিক।এই সুবাদে সেই তার জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে পারবে এবং সে যে জায়গায় জন্মগ্রহণ করেছে সেটি যদি গ্রামাঞ্চল হয় তাহলে চেয়ারম্যান অফিসে আবেদন করবে আর যদি শহরের কোনো এলাকা হয়ে থাকে তাহলে কমিশনার অফিসে তার জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করবে।
বাবা ও মায়ের জাতীয় সনদপত্রের কপি
পিতা তাদের পরে যে দুটি জিনিস অবশ্যই সাথে রাখতে হবে সেটি হলো বাবা ও মায়ের জাতীয় সনদপত্রের ফটোকপি। বাবা এবং মা দুইজনেরই একটি করে তাদের জাতীয় সনদপত্রের ফটোকপি জমা দিতে হবে।কারণ একি তারা যে বাংলাদেশের নাগরিক এটা প্রমাণ করে এবং তাদের সন্তান জন্মসূত্রে যে বাংলাদেশের নাগরিক এটার পক্ষে যুক্তি দেয়ার ক্ষেত্রে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।যদি বাবা-মা কারো জাতীয় সনদপত্র না থাকে তাহলে তারা তাদের জন্ম নিবন্ধনের ফটোকপি জমা দিতে পারবে কারণ এটিও জাতীয় সনদপত্রের মতো একই ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই করো জাতীয় সনদপত্র না থাকলে এটা নিয়ে চিন্তিত নাহয়ে নিজের জন্ম নিবন্ধন নিয়ে বাচ্চার জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করে দিতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃনগদ থেকে বিকাশে টাকা ট্রান্সফার করার নিয়ম
বিদ্যুৎ বিলের ফটোকপি
টিকা কার্ডের ফটোকপি ,বাবা ও মায়ের ডকুমেন্টস এর ফটোকপি জমা দেয়ার পরে তৃতীয় যে জিনিসটি অবশ্যই সাথে নিয়ে যেতে হবে সেটি হল বিদ্যুৎ বিলের ফটোকপি। বিদ্যুৎ বিলের ফটোকপি এজন্য জমা দিতে হয় কারণ আপনি যে বাংলাদেশ এর নাগরিক এবং একটি নির্দিষ্ট এলাকার বাসিন্দা সেটি প্রমাণ করার জন্য আপনার থেকে এই ডকুমেন্টসটি আপনার সাথে করে নিয়ে যেতে হবে, না হলে আপনি কিন্তু আপনার বাচ্চার জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে পারবেন না এই জিনিসটি অবশ্যই মাথায় রাখবেন। তাই জন্ম জন্মনিবন্ধন আবেদনের আগে এই বিদ্যুৎ বিলের ফটোকপিটি আপনার হাতের কাছে জমা রাখুন কারণ এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যদি কেউ বিদ্যুৎ বিলের ফটোকপি না পেয়ে থাকেন তাহলে সে চাইলে খতিয়ানের ফটোকপি জমা দিতে পারেন। বিদ্যুৎ বিল যেভাবে আপনি যে একটি নির্দিষ্ট এলাকার বাসিন্দা এবং বাংলাদেশের নাগরিক এই জিনিসটি প্রমাণ করে ,ঠিক তেমনিভাবে আপনার যদি খতিয়ান থাকে তাহলে ওই খতিয়ান আপনার পক্ষে বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ার যুক্তি দাঁড় করিয়ে থাকে। তাই বিদ্যুৎ বিল অথবা খতিয়ান যেকোনো একটি ডকুমেন্টস আপনার কাছে থাকলে এখনই আপনি আপনার বাচ্চার জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
বাচ্চার এক কপি সদ্য তোলা ছবি
টিকা কার্ড এর ফটোকপি, মা-বাবার জাতীয় সনদপত্রের ফটোকপি ,বিদ্যুৎ বিলের অথবা খতিয়ানের ফটোকপির পরে যে জিনিসটির প্রয়োজন পড়বে সেটি হল আপনার বাচ্চার সদ্য তোলা ছবি। ছবিটি অবশ্যই সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড এর হতে হবে এবং পাসপোর্ট সাইজের হতে হবে। আপনি যে ছবিটি জন্ম নিবন্ধনের জন্য জমা দিবেন সেটিতে আপনার বাচ্চার চেহারা স্পষ্টভাবে বোঝা যেতে হবে এবং বাচ্চা ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে আছে এই ধরনের ছবি হতে হবে না হলে ওই ছবিটি জন্ম নিবন্ধনের জন্য পক্ষ জমা নিবে না এবং পুনরায় আপনার ছবি তুলতে হবে। ছবি তোলার সময় অবশ্যই ছবিটি কিরকম হতে হবে তার প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেকে নিবেন না হলে পরবর্তীতে আপনি আবেদন অফিসে যেয়ে সমস্যার সম্মুখীন হবেন।এতে আপনার সময় এবং টাকা দুইটোই নষ্ট হবে।
জন্ম নিবন্ধন আবেদনের ফর্ম
জন্ম নিবন্ধন আবেদন ফর্ম অবশ্যই গুগল থেকে ডাউনলোড করে নিতে হবে। এই জন্ম নিবন্ধন আবেদনের ফরমটি অবশ্যই সতর্কতার সাথে পূর্ণ করবেন কারণ এখানে কোন ভুল হলে এটি আপনার বাচ্চার জন্ম নিবন্ধন এর মধ্যে ভুল তুলে ধরবে। তাই ফর্মটি পূরণ করার সময় সব থেকে বেশি খেয়াল রাখবেন বাচ্চার মা-বাবার বানানের প্রতি সাথে বাচ্চার নামের বানানের দিকে।তাছাড়া বাচ্চার স্থানীয় ঠিকানা,বর্তমান ঠিকানা এইসব কিছু খুবই মনোযোগ সহকারে লিখবেন। এগুলা অবশ্যই ভালোভাবে লিখতে হবে কারণ এটির মাধ্যমে বাচ্চা বিভিন্ন জায়গায় বড় হলে আবেদন করবে।তাই যদি কোন তথ্য ভুল হয় তাহলে বাচ্চাটি অনেক ধরনের সমস্যায় সম্মুখীন হবে যখন বিভিন্ন জায়গা তে আবেদন করবে তাই ফর্ম পূর্ণ করতে হবে মনোযোগ সহকারে।
আরো পড়ুন:ব্যাংক একাউন্ট খুলবেন কিভাবে
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url