কিভাবে নবজাতক শিশুর পরিচর্যা করবেন
যখন একটি বাচ্চা পৃথিবীতে জন্ম নেই তখন নতুন মা-বাবার জন্য অনেক দায়িত্ব সাথে নিয়ে আসে।একটি শিশু যখন সদ্যজাত অবস্থায় থাকে তখন ওর অনেক বেশি পরিচর্যা আর যত্নের প্রয়োজন হয়।এই সময়ের একটু অসর্তকতা অনেক বড় বিপদ ডেকে নিয়ে আসতে পারে।তাই আজকে আমি নবজাতক শিশুর সঠিক পরিচর্যা ও যত্ন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
বুকের দুধ পান করানো
নবজাতক শিশুকে কোন অবস্থাতে ফর্মুলা মিল্ক দেওয়া যাবে না।কারণ বুকের দুধের মত শক্তি অন্য কোন দুটি পাওয়া যায় না।কিন্তু অনেক সময় এটা সম্ভব হয়ে ওঠে না যে মা তার নবজাতক শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াবে।বিশেষ করে যারা সিজারে বাচ্চা জন্ম দিয়ে থাকে তাদের বুকের দুধ আসতে একটু সময় লাগে। কিন্তু কিছু ঘন্টা পর চেষ্টা করলে ঠিকই বুকের দুধ আসে তাই উত্তেজিত না হয়ে একটু অপেক্ষা করতে হবে।আবার যাদের নরমালে বেবি হয় তাদের সাথে সাথেই বুকের দুধ নেমে যায়।তাই এই কথাটি অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে বাচ্চার জন্য বুকের দুধ সব থেকে জরুরী। এই কারণে নবজাতকের পরিচর্যা ও যত্নের প্রথম ধাপ হচ্ছে বুকের দুধ পান করানো।
আরো পড়ুন:খারাপ মন ভালো করার উপায়
সাথে সাথে গোসল না করানো
বাচ্চা জন্ম নেয়ার সাথে সাথে বাচ্চাকে ভুলেও গোসল না করানো।বাচ্চাকে কিছুদিন পরে গোসল করাতে হয়।কেউ চাইলে একটা হালকা পাতলা কাপড় নিয়ে বাচ্চাকে মুছে দিতে পারে। কিন্তু কোনো নবজাতককে সাথে সাথে গোসল করানো উচিত নয়।এর কিছু কারণ আছে অবশ্যই তার মধ্যে সবথেকে ঝুঁকিপূর্ণ হচ্ছে বাচ্চার সহজে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। আর ঠান্ডা লাগা থেকে বাচ্চার নিউমোনিয়া ও বিভিন্ন ধরনের রোগ হতে পার। যার জন্য বাচ্চাকে জরুরি বিভাগে পর্যন্ত ভর্তি করার প্রয়োজন হয়ে ওঠে।
বাচ্চাকে সবার কোলে না দেয়া
নবজাতক বাচ্চাকে সবার কোলে দেয়া উচিত নয়।বিশেষ করে যদি নবজাতক বাচ্চার কোন বড় ভাই অথবা বোন থাকলে যার এখনো বয়স দশের নিচে তাদের কোলে না দেয়া।কারণ তারাও এখনো বাচ্চা তারা ঠিক জানেনা কিভাবে একজন নবজাতক বাচ্চাকে কোলে নিতে হয়।তাই এই ক্ষেত্রে নতুন মা-বাবার একটু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে যে তারা যদি কোন শিশুকে তাদের নবজাতককে কোলে দেয় তাহলে তারাও যেন সাথে থাকে।
বাচ্চার নড়াচড়ার দিকে নজর রাখা
নবজাতক বাচ্চার নড়াচড়ার দিকে অবশ্যই সতর্কতার সাথে খেয়াল রাখতে হবে।এটা এই জন্য জরুরী যে আপনি তখন বুঝতে পারবেন আপনার বাচ্চা স্বাভাবিক না ওর মাঝে কোন অস্বাভাবিকতা আছে। ডাক্তাররা প্রায় নতুন মা বাবা তে সতর্ক করে তাকে যাতে তারা এই বিষয় নিয়ে বিস্তারিত ভাবতে পারে। একজন নবজাতক জ্যোতি স্বাভাবিকভাবে নড়াচড়া না করে অথবা তার মধ্যে যদি নড়াচড়া প্রবণতা না থাকে তাহলে বুঝতে হবে তার হাতে বা পায়ে অথবা শরীরের কোন অংশের সমস্যা রয়েছে।এতে আপনি ডাক্তারের কাছে বাচ্চাকে নিয়ে গিয়ে জরুরি চিকিৎসা করাতে পারবেন এবং এতে বাচ্চার ভবিষ্যতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাবে।
বাচ্চার চুল না ফেলা
আমাদের দেশে প্রায়ই দেখা যায় একটি বাচ্চা জন্ম নেয়ার সাথে সাথে তার চুল ফেলে দেয়। কিন্তু এটি করা মোটেও উচিত নয়। উন্নত দেশে বাচ্চা হবার এক বছর পর তার চুল ফেলা হয়। এটা এই জন্য জরুরী কারণ যখন বাচ্চা জন্ম নেয় তখন তার মাথা অনেক তুলতুলে নরম থাকে। এই অবস্থায় তার চুল ফেলা মোটেও উচিত নয় কারণ এতে বাচ্চার ব্রেনে অনেক সমস্যা হয়ে যায়।তাই একটি বাচ্চা জন্ম নেয়ার এক বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে তারপর ওর চুল ফেলতে হবে। এই বিষয়টি প্রত্যক্ষ মা-বাবার জানা অনেক জরুরী।এটা প্রত্যক্ষ নতুন মা বাবার জানা দরকার তাহলে অনেক নবজাতক শিশু বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে বেঁচে যাবে।
আরো পড়ুন:মাথা ঘোরা ও চোখে ঝাপসা দেখার কারন কি
বাচ্চাকে ডায়াপ্যান্ট পড়ানো
আমাদের দেশে প্রায় দেখা যায় যে কোন বাচ্চা জন্ম নিলে তাকে কখনো ডায়াপার পরতে দেয়া হয় না। এটা মোটেও ঠিক না কারণ অনেক নতুন মা-বাবা আছে যাদের পরিবারে কেউ থাকেন, তখন একজন নতুন মায়ের জন্য এটা অনেক কঠিন হয়ে পড়ে যে সে তার বাচ্চাকে ডায়াপার ছাড়া রাখবে।তাই নবজাতক বাচ্চা অবশ্যই ডায়াপার পরতে পারবে এবং বাজারে অনেক ডায়াপার পাওয়া যায় যেগুলো নবজাতক বাচ্চাদের জন্য তৈরি করা।
পরিশেষে একটি কথা না বললেই নয় সেটি হলো একজন নবজাতক শিশুর পরিচর্যা করার জন্য সবার আগে একজন নতুন মায়ের খেয়াল রাখতে হবে কারণ মা যদি সুস্থ থাকে তাহলে তার নবজাতক বাচ্চাটাও সুস্থ এবং সবল থাকবে।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url