গর্ভাবস্থায় পানি কমে গেলে করণীয় - গর্ভাবস্থায় পানি পরিমান কতটুকু

গর্ভাবস্থায় পানি কমে গেলে করণীয় সম্পর্কে অনেক মহিলা জানতে চাই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মহিলাদের গর্ভাবস্থায় পানি কমে গেলে করণীয় জেনে না থাকার কারণে ভিন্ন ধরনের বিপদের সম্মুখীন হতে হয়। তাই একজন গর্ভবতী মায়ের সুবিধা এবং তার বাচ্চার সুরক্ষার জন্য এই আর্টিকেলে গর্ভাবস্থায় পানি কমে গেলে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

তাহলে চলুন দেরি না করে ঝটপট গর্ভাবস্থায় পানি কমে গেলে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। উক্তি বিষয়ে জানতে হলে আপনাকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।

সূচিপত্রঃ গর্ভাবস্থায় পানি কমে গেলে করণীয় - গর্ভাবস্থায় পানি পরিমান কতটুকু

গর্ভাবস্থায় পানি কমে গেলে করণীয়

মেয়েদের গর্ভাবস্থার সময় অনেক সতর্কতার সাথে থাকতে হয় নিজের এবং বাচ্চা সুরক্ষার জন্য। তবুও অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। এই সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো গর্ভাবস্থায় পানি কমে যাওয়া। এখন যদি আপনার এ ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে গর্ভাবস্থায় পানি কমে গেলে করণীয় সম্পর্কে অবশ্যই ধারণা রাখতে হবে। প্রথমে আমাদেরকে জানতে হবে গর্ভবতী মায়ের পানি কমে যাওয়ার কারণ।

আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কি কি মাছ খাওয়া যাবে না - গর্ভাবস্থায় কি কি মাছ খাওয়া যাবে

গর্ভবতী মায়ের গর্ভের পানি কমে যাওয়ার অনেকগুলো কারণ রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু কারণ হলো যদি লেবারের আগেই এমনিওটিক ফ্লুইড এর মেমব্রেন ফেটে যায় তাহলে অনেক সময় গর্ভবতী মায়ের গর্ভের পানি কমে যেতে পারে। এছাড়া জন্মগত ত্রুটির কারণে অনেক সময় গর্ভে থাকা শিশুর কিডনিসহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থাকে।

গর্ভবতী নারীর প্রসবের নির্ধারিত তারিখের পরও যদি দুই সপ্তাহের বেশি সময় পার হয়ে যায় তাহলে এ ধরনের সমস্যা হতে পারে। গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ভারী কাজ করলে এবং সময় মত পানি পান না করলে পানি ভাঙ্গা শুরু হতে পারে এবং গর্ভবতী নারীর গর্ভে পানি কমে যেতে পারে। এছাড়া যে সকল নারীদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এ ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।

সাধারণত গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী নারীর গর্ভে পানি কমে যাওয়া রোধ করার তেমন কোন উপায় নেই। যদি এ ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে আপনাকে নিয়মিত চেকআপ করতে হবে এবং চিকিৎসার পরামর্শ নিতে হবে। বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে সবসময় চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করতে হবে।

গর্ভাবস্থায় পানি কমে যাওয়া চিকিৎসা গর্ভাবস্থার পর্যায়ের উপর নির্ভর করে থাকে। ৩৭ সপ্তাহ সম্পূর্ণ হওয়ার পর পানি কমে গেলে শিশু নিরাপত্তার খাতিরে অনেক সময় চিকিৎসক ডেলিভারি করিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। যদি অতিরিক্ত পরিমাণে সমস্যা হয় তাহলে এটি হচ্ছে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ।

গর্ভাবস্থায় পানি পরিমান কতটুকু

গর্ভাবস্থায় পানি পরিমান কতটুকু এ বিষয়টি অবশ্যই একজন গর্ভবতী মায়ের জেনে থাকা উচিত। কারণ গর্ভবতী মায়ের গর্ভে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি গর্ভবতী মায়ের গর্ভে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না থাকে তাহলে মায়ের এবং শিশুর বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। এক্ষেত্রে শিশুর শারীরিক বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। তাই গর্ভাবস্থায় পানি পরিমান কতটুকু থাকতে হবে এ বিষয়গুলো জেনে নেওয়া জরুরী।

আমরা জানি যে আমাদের শরীরে প্রায় 60% পানি থাকে। পানি শরীরে জমে থাকার কারণে ক্ষতিকর টক্সিন কে ধুয়ে ফেলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়া আমাদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ও মস্তিষ্ককে সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। একজন সাধারন মহিলা চাইতে একজন গর্ভবতী মহিলার শরীরে পানি বেশি থাকতে হবে। কারণ গর্ভাবস্থা হলো একজন মহিলার জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়।

একজন সুস্থ সবল ও পূর্ণবয়স্ক মানুষকে প্রতিদিন ২ লিটার পানি পান করতে বলা হয়ে থাকে সুস্থ থাকার জন্য। এছাড়া আরও বিভিন্ন ধরনের খাবার খেতে বলা হয়ে থাকে। কিন্তু গর্ভবতী মহিলার গর্ভে আরেকটি প্রাণ রয়েছে তাই একজন গর্ভবতী মহিলার ২ লিটার পানির পাশাপাশি অতিরিক্ত ৫০০ মিলি লিটার পানি পান করা উচিত। এতে করে গর্ভে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি থাকবে এবং বাচ্চা ও মা দুজনেই থাকবে।

গর্ভাবস্থায় পানি বেড়ে গেলে করণীয়

গর্ভাবস্থায় যেমন নারীদের পানি কমে যেতে পারে ঠিক তেমন অনেক ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় নারীদের গর্ভে পানি বেড়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে আপনাকে গর্ভাবস্থায় পানি বেড়ে গেলে করণীয় সম্পর্কে জেনে রাখতে হবে কারণ আপনি ইতিমধ্যেই গর্ভাবস্থায় পানি কমে গেলে করণীয় সম্পর্কে জেনে এসেছেন। গর্ভে পানি বৃদ্ধি পাওয়ার অনেকগুলো কারণ রয়েছে।

আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কমলা খাওয়ার ৮টি কার্যকরী উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় পানি বেড়ে গেলে করণীয়ঃ

১। গর্ভাবস্থায় যদি নারীদের গর্ভে পানি বৃদ্ধি পায় তাহলে নিয়মিত হাঁটাচলা এবং ব্যায়াম করার চেষ্টা করতে হবে। এগুলো করার ফলে রক্ত প্রবাহ স্বাভাবিক হবে এবং নারীদের শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি বেরিয়ে আসবে। তাই অতিরিক্ত ব্যায়াম না করে পর্যাপ্ত পরিমাণে ব্যায়াম করতে হবে।

২। গর্ভাবস্থায় অবশ্যই নারীদের ঢিলেঢালা আরামদায়ক জামা কাপড় পড়তে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন শরীর অতিরিক্ত চেপে না যায়। গর্ভাবস্থায় এ বিষয়গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

৩। বেশীক্ষণ ধরে একজন গর্ভবতী মহিলাকে দাঁড়িয়ে থাকা যাবে না। একলাগারে দাঁড়িয়ে না থেকে কিছুক্ষণ পরপর বুঝতে হবে। বসার সময় ঠিক ভাবে বুঝতে হবে যেন পড়ে যাওয়া সম্ভাবনা না থাকে।

৪। গর্ভবতী মহিলাকে লবণ কম খেতে হবে। এবং যতটা সম্ভব পটাশিয়ামযুক্ত খাবার মিষ্টি আলু, কমলা কলা এ ধরনের খাবারগুলো খেতে হবে। এছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। যদি গর্ভে পানি বেশি হয়ে যায় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

গর্ভাবস্থায় পানি কমে যাওয়ার লক্ষণ

গর্ভবতী নারীদের যে সকল সমস্যা হয়ে থাকে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো গর্ভাবস্থায়ী গর্ভের মধ্যে থাকা পানি কমে যাওয়া। আমরা ইতিমধ্যেই গর্ভাবস্থায় পানি কমে গেলে করণীয় সম্পর্কে ইতিমধ্যে জেনেছি এখন আমরা জানব গর্ভাবস্থায় পানি কমে যাওয়ার লক্ষণ সম্পর্কে। আপনি যদি এই লক্ষণগুলো জেনে রাখতে পারেন তাহলে খুব সহজেই এখান থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারবেন।

গর্ভাবস্থায় পানি কমে যাওয়ার লক্ষণঃ

১। যদি গর্ভের পানি কমে যায় তাহলে ৩৫-৩৬ সপ্তাহের পর থেকে প্রসবের আগে পর্যন্ত ফ্লইডের পরিমাণ ধীরে ধীরে কমে যেতে পারে।

২। গর্ভধারণের তুলনায় পেটের আকার অনেক ছোট থাকলে এছাড়া বাচ্চাদের নাড়াচাড়া করতে সমস্যা হলে এ ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে।

৩। গর্ভবতী নারীর প্রসবের সময় আগে থেকেই যোনিপথে ফোটায় ফোটায় অথবা তার থেকে বেশি পরিমাণে পানির মতো করে তরল পদার্থ বের হওয়া।

৪। গর্ভধারণের সাথে সাথে গর্ভবতী মায়ের ওজন বৃদ্ধির হার অনেক কমে গেলে বুঝতে হবে গর্ভবতী মায়ের গর্ভে পানি পরিমাণ কমে গিয়েছে।

আমাদের শেষ কথাঃ গর্ভাবস্থায় পানি কমে গেলে করণীয় - গর্ভাবস্থায় পানি পরিমান কতটুকু

প্রিয় পাঠকগণ আজকের এই আর্টিকেলে গর্ভাবস্থায় পানি কমে গেলে করণীয়, গর্ভাবস্থায় পানি পরিমান কতটুকু? গর্ভাবস্থায় পানি বেড়ে গেলে করণীয়, গর্ভাবস্থায় পানি কমে যাওয়ার লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আপনার যদি এ ধরনের সমস্যা থাকে তাহলে অবশ্যই আপনাকে এ করণীয়গুলো সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। কারণ আপনি যদি গর্ভাবস্থায় পানি কমে গেলে করণীয় সম্পর্কের ধারণা রাখতে পারেন তাহলে এটি আপনার এবং আপনার সন্তানের জন্য সুবিধা জনক।

আরো পড়ুনঃ গর্ভবতী মায়ের ফল খাবার তালিকা - গর্ভবতী অবস্থায় কি কি ফল খাওয়া উচিত

এতক্ষণ আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং তথ্যমূলক আর্টিকেল আরো জানতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করুন। কারণ আমাদের ওয়েবসাইটের নিয়মিত এ ধরনের আর্টিকেল প্রকাশ করা হয়।২০৭৯১


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url