হার্ডিঞ্জ ব্রিজ কোন নদীর উপর এবং কোথায় অবস্থিত
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ কোন নদীর উপর এবং কোথায় অবস্থিত আপনি কি জানেন যদি জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। আমি আপনাদের হার্ডিঞ্জ ব্রিজ কোন নদীর উপর এবং কোথায় অবস্থিত বা হার্ডিঞ্জ ব্রিজ প্রতিষ্ঠা করেন কে তার সকল বিস্তারিত জানাবো। হার্ডিঞ্জ ব্রিজ কোন নদীর উপর এবং কোথায় অবস্থিত জানতে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
আমরা সবাই কম বেশি হার্ডিঞ্জ ব্রিজ সম্পর্কে জানি বা হার্ডিঞ্জ ব্রিজ দেখেছি। এটা বাংলাদেশের একটা খুব পুরাতন ব্রিজ। কিন্তু অনেকেই এই ব্রিজ সম্পর্কে তেমন কিছুই জানেন না। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক হার্ডিঞ্জ ব্রিজ কোন নদীর উপর এবং কোথায় অবস্থিত সাথে আরো হার্ডিঞ্জ ব্রিজ প্রতিষ্ঠা করেন কে ও হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এর অপর নাম কি।
সূচিপত্রঃ হার্ডিঞ্জ ব্রিজ কোন নদীর উপর এবং কোথায় অবস্থিত
- হার্ডিঞ্জ ব্রিজ প্রতিষ্ঠা করেন কে
- হার্ডিঞ্জ ব্রিজ কোন নদীর উপর এবং কোথায় অবস্থিত
- হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এর অপর নাম কি
- হার্ডিঞ্জ ব্রিজের দৈর্ঘ্য ও উচ্চতা
- হার্ডিঞ্জ ব্রিজ কোন নদীর উপর এবং কোথায় অবস্থিত তা নিয়ে প্রশ্ন/উত্তর
- শেষ কথা
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ প্রতিষ্ঠা করেন কে
কলকাতা এবং তখনকার পূর্ববঙ্গ এবং আসামের মধ্যে সহযে যোগাযোগের জন্য ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ের মাধ্যমে ১৮৮৯ সালে পদ্মার উপর একটি রেল সেতু নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছিল। ১৯০২ সালে স্যার এফজেই স্প্রিং সেতু সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেন। তখন একটি কারিগরি কমিটি জানিয়েছে যে খুলনা থেকে পার্বতীপুর উপজেলা পর্যন্ত ব্রডগেজ রেলপথে পাকশি এবং ভেড়ামারা উপজেলা স্টেশনের মধ্যে নিচের গঙ্গা পার হয়ে সারা নামক স্থানে একটি সেতু নির্মাণ করা যেতে পারে।
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এর নির্মাণ কাজ ১৯১০ সালে শুরু হয় এবং দুই বছর পরে শেষ হয়। সেতুটিতে ১৫টি স্টিলের ট্রাস রয়েছে। তাহলে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ প্রতিষ্ঠা করেন কে এই প্রশ্নের সংক্ষিপ্ত উত্তর হল সেতুটি তৈরির জন্য ১৯০২ সালে স্যার এফজেই স্প্রিং প্রথম পরিকল্পনা করেন এবং যখন রেলপথ নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয় তখন ১৯০৮ সালে সেই প্রকল্পটি তদারকি করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল এবং সেই কমিটির প্রধান প্রকৌশলী ছিলেন ব্রিটেনের স্যার রবার্ট গেইলস। এখান থেকে আমরা জানতে পারি হার্ডিঞ্জ ব্রিজ প্রতিষ্ঠা করেন কে।
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ কোন নদীর উপর এবং কোথায় অবস্থিত
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ একটি ইস্পাতের রেলওয়ে সেতু যা প্রিফেব্রিকেটেড ট্রাস দিয়ে তৈরি এবং ভারতের ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জের নামে নামকরণ করা হয়েছে। সেতুটি খুলনা থেকে পার্বতীপুর পর্যন্ত ব্রডগেজ রেলপথে পাকসে এবং ভেড়ামারা স্টেশনের মধ্যে সারা নামক গঙ্গা অতিক্রম করে গেছে।
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ কোন নদীর উপর এবং কোথায় অবস্থিতঃ
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পদ্মা নদীর ওপর অবস্থিত। আমরা জানি পদ্মা নদী বাংলাদেশ থেকে সরাসরি ভারতে গিয়ে ডুকেছে। তখনকার দিনে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সহজে যোগাযোগ করতে এই ব্রিজ তৈরি করা হয়। এই ব্রিজ খুব মজবুত ভাবে তৈরি করা এবং অনেক বছর ধরে ব্রিজটা ওভাবেই এখন দাঁড়িয়ে আছে।
আরো পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় ডাবের পানি খাওয়ার উপকারিতা
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পাবনা জেলার ঈশ্বরদী থানায় অবস্থিত। সেতুটির কাজ শুরু হয়েছিল ১৯১০ সালে এবং কয়েক বছর পরে শেষ হয়েছিল। সেতুটিতে ১৫টি স্টিলের ট্রাস রয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গার্ডারগুলি পরিবর্তিত পেটিট টাইপের হওয়াতে এটা খুব মজবুত। নদীর তীরের প্রান্তগুলি ভিতরের দিকে বাঁকা ছিল এবং পাথর দিয়ে খুব শুক্ষভাবে তৈরি করা হয়েছিল। এখানে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ কোন নদীর উপর এবং কোথায় অবস্থিত তা জানা যায়।
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এর অপর নাম কি
মুক্তিযুদ্ধের সময় হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ১২তম স্প্যান মর্টার শেল ভেঙে নদীতে পড়ে যায়। স্প্যানটির এক প্রান্ত বেসের সাথে বিপজ্জনকভাবে ঝুলে ছিল এবং অন্য প্রান্ত থেকে ১২.২ মিটার অংশ ভেঙে পড়েছিল। একটি ক্রুজ গার্ড এবং ১৫তম স্প্যানের দুটি স্ট্রিগার এবং দ্বিতীয় বেসের স্টিলের ট্যাসেলও মর্টার শেল দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং ভারতের ইস্টার্ন ইন্ডিয়া রেলওয়ে একসাথে মিলে তাদের যৌথ উদ্যোগে ব্রিজটি পুনরায় মেরামত করে ১৯৭২ সালের ১২ অক্টোবর সেতুটি পুনরায় চালু করা হয়। কিন্তু সেতুর কিছু অংশ পরিবর্তন করতে হয়েছে।
আরো পড়ুনঃ আম গাছ সম্পর্কে ১০ টি বাক্য
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ তৈরি হয়ে গেলে এটা উদ্বোধন করার আগে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এর অপর নাম কি ছিল জানেন এই ব্রিজের নাম ছিল সারা ঘাট ব্রিজ। মানে এই ব্রিজ ট্রেন চলাচলের আগে সারা ঘাট ব্রিজ নামে পরিচিত ছিল। এটি পূর্ববঙ্গে বা বর্তমানে পশ্চিম বাংলাদেশ এ অবস্থিত গঙ্গা নদীর উপর সারার একটি ইস্পাত রেল সেতু নামে পরিচিত ছিল। এটি লর্ড হার্ডিঞ্জের নামে নামকরণ করা হয়েছে যিনি ১৯১০ থেকে ১৯১৬ সাল পর্যন্ত ভারতের ভাইসরয় ছিলেন।
হার্ডিঞ্জ ব্রিজের দৈর্ঘ্য ও উচ্চতা
হার্ডিঞ্জ ব্রিজটি ১.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ। কংক্রিট কিউব দিয়ে তৈরি ১৬টি পিয়ার রয়েছে। জলের উপরে পিয়ারের একটি অংশ ইস্পাত দিয়ে তৈরি। সেতুটিতে ১৫টি স্টিলের ট্রাস রয়েছে যার প্রতিটি ৩৪৫ ফুট ১১/২ ইঞ্চি স্প্যানের মধ্য দিয়ে মূল পয়েন্ট থেকে বিয়ারিং পর্যন্ত সঙ্গে ৬ ডেক ধরনের স্টিলের গার্ডার দ্বারা অ্যাপ্রোচ স্প্যান রয়েছে।
প্রতিটি বিয়ারিংয়ের কেন্দ্র থেকে ৭৫ ফুট মাঝখানে অবস্থিত। হার্ডিঞ্জ ব্রিজের আসল ইস্পাতটি BS 4360-এর গ্রেড 43-এর সমান হালকা ইস্পাত এর মত যার ফলন 20.8 টন/বর্গ ইঞ্চি। ব্রডগেজ লাইনগুলো পাশাপাশি রাখা হয়েছে নিচের দিকে আলাদা ফুটপাথ দিয়ে। সেতুর উজানের পাশ দিয়ে একটি উচ্চ বৈদ্যুতিক লাইন চলে গেছে।
আরো পড়ুনঃ ছাত্রদের টাকা আয় করার ২০টি সেরা কার্যকরী উপায়
সেতুর হেডরুমটি মেঝে স্তর থেকে 6.71 মিটার উচ্চতা পর্যন্ত কাঠামোগত ফ্রেম দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। উপরে আমরা হার্ডিঞ্জ ব্রিজ কোন নদীর উপর এবং কোথায় অবস্থিত তা জেনেছি। এখন তাহলে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের দৈর্ঘ্য ও উচ্চতা সংক্ষেপে বলতে গেলেঃ
- মোট দৈর্ঘ্য 6.15 কিমি (3.82 মাইল)
- প্রস্থ 18.18 মি (59.6 ফুট)
- উচ্চতা 120 মিটার (390 ফুট)
- পানির গভীরতা ২৯ মি (৯৫ ফুট)
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ কোন নদীর উপর এবং কোথায় অবস্থিত তা নিয়ে প্রশ্ন/উত্তর
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ কে তৈরি করেন?
হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নির্মাণ কাজ ১৯১০ সালে শুরু হয়েছিল, যদিও এটি কমপক্ষে ২০ বছর আগে প্রস্তাবিত হয়েছিল। স্যার আলেকজান্ডার মিডোস রেন্ডেলের নকশার উপর ভিত্তি করে ব্রেথওয়েট এবং কার্ক কোম্পানি এটি নির্মাণ করেছিল। এটি ১৯৭২ সালে সম্পন্ন হয়েছিল এবং ১৯১৫ সালে ট্রেনগুলি এটিতে চলতে শুরু করে।
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ তৈরিতে বাংলাদেশের কত খরচ হয়েছিলো?
কূপ খনন করে সেতুটি নির্মাণের জন্য 1,250 টন ওজনের 15টি ট্রাস স্থাপন করা হয়েছিল। যদিও পুরো নির্মাণকাজ শেষ করতে প্রায় তিন লাখ ইট, ৩০ লাখ টন স্টিল, সাধারন সিমেন্টের ১,৭০,০০০ ড্রাম এবং বিভিন্ন ধরনের সিমেন্টের ১২ লাখ ড্রাম লেগেছে। মোট খরচ হয়েছে ৩,৫১,৩২,১৬৪ টাকা।
বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর সেতু কোনটি?
- পদ্মা সেতু একটি স্বপ্নের প্রকল্প।
- বঙ্গবন্ধু সেতু - যমুনা নদী বাংলাদেশের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নদী।
- মেঘনা সেতু - এই সেতুটি সাধারণত বাংলাদেশের একটি সড়ক সেতু।
- লালন শাহ সেতু - লালন শাহ সেতু পদ্মা নদীর উপর অবস্থিত।
- হার্ডিঞ্জ ব্রিজ - বাংলাদেশের প্রাচীনতম সেতু।
- শাহ আমানত সেতু।
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ কোন নদীর উপর এবং কোথায় অবস্থিত - শেষ কথা
হার্ডিঞ্জ ব্রিজ বাংলাদেশের পশ্চিম অঞ্চলে অবস্থিত একটি কাঠামো যা একসময় আসাম, পূর্ববঙ্গ এবং কলকাতার মধ্যে আরও সুবিধাজনক যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি করার জন্য রেলপথ হিসাবে ব্যবহৃত হত। হার্ডিঞ্জ ব্রিজ নির্মাণের প্রস্তাব ১৮৮৯ সালে পেশ করা হয়েছিল, কিন্তু সেতুটি চালু হতে বিশ বছর সময় লেগেছিল। আজ এটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রেলসেতু।
বর্তমানে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের পাশে লালন শাহ সেতু তৈরি হলেও বাংলাদেশে এটি একটি উল্লেখযোগ্য আকর্ষণ হিসেবে থেকে যাবে। আশা করি উপরের আলোচনা থেকে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ কোন নদীর উপর এবং কোথায় অবস্থিত আবার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ প্রতিষ্ঠা করেন কে এবং হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এর অপর নাম কি এসব সম্পর্কে জানতে পারবেন। ২২৪৯৮
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url